একাধিক উল্লেখযোগ্য ফিচার্স নিয়ে এল Windows 11, বদলে যাবে কম্পিউটার ব্যবহারের অভিজ্ঞতা!

Image Credit: Microsoft


বিশ্বের অন্যতম টেক জায়ান্ট Microsoft Corporation তাঁদের পার্সোনাল কম্পিউটার ইউজারদের জন্য Windows অপারেটিং সিস্টেমে বড়সড় পরিবর্তন করল। পূর্বের অপারেটিং সিস্টেম Windows 10 লঞ্চ হওয়ার প্রায় ছয় বছর পর মাইক্রোসফ্ট Windows 11 নিয়ে হাজির হল। পরবর্তী প্রজন্মের অপারেটিং সিস্টেম হিসেবে Windows 11 এর ডিজাইনে যথেষ্ট পরিবর্তন নিয়ে আসা হয়েছে। চলুন দেখে নেওয়া যাক নতুন এ অপারেটিং সিস্টেমস এ উল্লেখযোগ্য ফিচারস সমূহ কি কি, নতুন কি কি থাকছে, কবে এটি পাওয়া যাবে, Windows 11 insider Preview ISO কোথা থেকে ডাউনলোড করা যাবে ইত্যাদি।

পূর্বে Windows 11 লিকড আর্টিকেল এ যে সকল বিষয়গুলো আলোচনা করেছিলাম, সেগুলো এখানে আমরা আলোচনা করবো না। এখানে আমরা Windows 11 লঞ্চ ইভেন্টে সবচেয়ে প্রাধান্য পাওয়া ফিচারগুলো নিয়ে আলোচনা করবো। 



কবে থেকে Windows 11 পাওয়া যাবে? ফ্রিতে পাওয়া যাবে কিনা? 

মাইক্রোসফ্ট এর তরফ থেকে ঐদিন বলা হয়েছে যে, বছর শেষের ছুটির সময় অর্থাৎ বড়দিনের ছুটিতেই রোলআউট করা হবে উইন্ডোজ ১১। অর্থাৎ, বড়দিনের সময় থেকেই উইন্ডোজ ১১ সিস্টেম ব্যবহার করতে পারবেন ইউজারেরা। মাইক্রোসফ্ট আরো নিশ্চিত করেছে যে উইন্ডোজ ১০ এর ইউজাররা ফ্রিতেই আপডেট/আপগ্রেড করতে পারবেন উইন্ডোজ ১১ এ। 


আপনি চাইলে Windows 11 Beta Version-টা ফ্রিতে ব্যবহার করে দেখতে পারেন। আপনার পিসি উইন্ডোজ ১১ সাপোর্ট করবে কি না সেটি জানার জন্য Windows PC Health Check  টুলটির সাহায্য নিতে পারবেন ।


কিভাবে এবং কোথা হতে ডাউনলোড করবেন? তা জানতে এখানে ক্লিক করুন।





ফাস্টেড উইন্ডোজঃ


মাইক্রোসফট তাঁদের নতুন এ উইন্ডোজে ১১ অপারেটিং সিস্টেমসটি এ পর্যন্ত পূর্বের সকল অপারেটিং সিস্টেমস থেকে ফাস্ট হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তাই গেমিং সহ নতুন এ অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ ১১-ই হবে সবকিছুতে অনেক ফাস্ট। পিসি চালু হওয়া থেকে শুরু করে বন্ধ হওয়া, Microsoft Edge এর ব্রাউজিং, ব্যাকগ্রাউন্ডের উইন্ডোজ আপডেট সহ সবকিছু হবে অনেক দ্রুত। যা আগের সিস্টেমগুলো থেকে প্রায় ৪০% ফাস্ট হবে।


গেমিং এ সেরা পারফর্মেন্স এর প্রতিশ্রুতিঃ 


আপনি যদি গেমার হয়ে থাকেন তবে উইন্ডোজ ১১ অবশ্যই আপনার জন্য। যা তাঁদের ইতিহাসের সবথেকে Gaming Friendly অপারেটিং সিস্টেম হতে যাচ্ছে উইন্ডোজ ১১। নতুন এ উইন্ডোজের গেমিং পারফরমেন্স বুস্ট এর সাথে লোডিং টাইমও আগের চেয়ে অনেক ফাস্ট হবে। 


Image Credit: Microsoft


মাইক্রোসফট Direct Storage নামের নতুন একটি ফিচার ঘোষণা করেছে, যেটির সাহায্যে গেমগুলো গ্রাফিক্সকার্ডে সরাসরি Assets আপলোড করতে পারবে। এর ফলে লোডিং টাইম অনেক ফাস্ট ও ইন্সট্যান্ট গ্রাফিক্স রেন্ডারিং হবে। যা গেমিং এর ক্ষেত্রে  আগের যে লোডিং টাইম লেগে যেত তা অনেক কমে আসবে এবং সমগ্র গেমিং এক্সপেরিয়েন্স আগের চেয়ে অনেক বেটার হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


Gaming এ  Auto HDR ফিচারঃ


Image Credit: Microsoft

মাইক্রোসফ্ট গেমারদের জন্য উইন্ডোজ 11-এ অন্যতম আকর্ষনীয় ফিচার হলো  Auto HDR। এখন থেকে Auto HDR ফিচারকে উইন্ডোজে ব্যবহার করা যাবে। এসডিআর (স্ট্যান্ডার্ড ডায়নামিক রেঞ্জ) গেমগুলিকে উইন্ডোজ সম্পুর্ণ AI এর মাধ্যমে লাইটিং, ও কালার এডজাস্ট বা বুস্ট/ইম্প্রুভ করবে, অর্থাৎ ডাইনামিক রেঞ্জে ব্যাপক চেঞ্জ করতে পারবে এই ফিচারটি। বিশেষ করে পুরোনো গেমগুলো, যেগুলো শুধুমাত্র SDR সমর্থন করে, সেগুলো এ Auto HDR ফিচারের মাধ্যমে স্টান্ডার্ড রেজাল্ট পাওয়া সম্ভব হবে।


Xbox Built in App:


Image Credit: Microsoft

উইন্ডোজ 11 তে  বিল্ট-ইন Xbox App নিয়ে আসছে মাইক্রোসফ্ট, যাতে তাদের ব্যবহারকারী হিসেবে আপনি এ এপস এর মাধ্যমে গেম পাস, এক্সবক্স স্টোর এবং এক্সক্লাউড সরাসরি সহজেই অ্যাক্সেস করতে পারেন। এছাড়া গেম পাস সাবস্ক্রাইবাররা xCloud technology দিয়ে সরাসরি স্ট্রিমিং ও করতে পারবেন।


সরাসরি Android Apps চলবে উইন্ডোজেঃ 


উইন্ডোজ ইউজারদের জন্য সব থেকে কার্যকরি ফিচার মনে হয় এটিই হতে যাচ্ছে। উইন্ডোজ ১১ অপারেটিং সিস্টেম যে সব পার্সোনাল কম্পিউটারে থাকবে, সেগুলিতে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস সরাসরি ব্যবহার করা যাবে। 

এতদিন উইন্ডোজ স্টোর ব্যবহাকারী, প্রোগ্রামার সহ অনেকের জন্যই সুবিধাজনক ছিল না, এটি শুধু UWP Apps সাপোর্ট করতো, অনেক দরকারী এবং প্রয়োজনীয় App ই ছিল না এই স্টোরে। নির্দিষ্ট ইউজারদের টার্গেট করেই App গুলোর ডেভেলপমেন্ট, ইন্টারফেস ও প্রোগ্রামিং করা হতো ।

এবারের উইন্ডোজ স্টোর এ Win32 ভার্সন (এটি সবথেকে কমন ও বেশি ব্যবহ্বত Application framework, যা প্রায় সকল পিসির জন্য উপযোগি) সাপোর্ট সহ ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। এছাড়া ডেভেলপারদের জন্য পেমেন্ট সিস্টেম চালু করার অনুমতি/সুযোগ ও দিচ্ছে এই স্টোর।



Windows 11-এ প্রায় সব Android Apps-ই সাপোর্ট করবে। Microsoft-এর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, প্রাথমিক ভাবে উইন্ডোজ ১১-তে প্রায় 5,00,000 অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস দেওয়া হবে। তালিকায় রয়েছে Disney+, Hotstar, TikTok, Uber-সহ একাধিক জনপ্রিয় অ্যাপস। যদিও, Google Play Store-এর সব অ্যাপ পাওয়া যাবে না বলে জানিয়েছে মাইক্রোসফট।

আপনার পিসিতে যদি আপনি কোনও Android অ্যাপ ইনস্টল করতে চান তাহলে প্রথমে Amazon App Store ডাউনলোড করতে হবে এবং তার পরে নিজের Amazon অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে সাইন ইন করে Amazon App Store থেকে ইন্সটল করে ব্যবহার করতে পারবেন। তাছাড়া Android Apps সরাসরি চালানো সম্ভব হবে ইন্টেলের Bridge Technology এর মাধ্যমেও।

  

নতুন Microsoft Store: 

Image Credit: Microsoft

Image Credit: Microsoft


মাইক্রোসফট স্টোরকে সম্পূর্ন নতুন ভাবে সাজানো হয়েছে, যা আমরা আগেও বলেছি। এর ইন্টারফেস, লেআউট, ফিচার সবকিছুই নতুন করে সাজানো হয়েছে। ইউজার ফ্রেন্ডলি হওয়ায় এবারের স্টোর থেকে ব্যবহারকারীরা যথেষ্ট বেনিফিট পাবেন বলে আশা করা যায়।


Microsoft Team:


Image Credit: Microsoft
Image Credit: Microsoft

মাইক্রোসফট এর কনফারেন্সিং/ভিডিও কলিং App Microsoft Team এবার সরাসরি Integrated থাকছে উইন্ডোজের সাথে। ক্রস প্লাটফর্ম ভিডিও চ্যাট/ কনফারেন্স/কল করা যাবে, অর্থাৎ Windows 11 থেকে IOS, Android সহ অন্যন্য OS এ কল ও মেসেজিং করা যাবে। এমনকি আপনি অন্য প্রান্তে যে ব্যক্তির সাথে সংযুক্ত হয়েছেন, সে যদি টিমস অ্যাপটি ডাউনলোড নাও করে থাকে তবে আপনি এখনও two-way SMS এর মাধ্যমে তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারেন।

  

মাল্টি-মনিটর সেটাপঃ 


এখন হতে আরো সহজে পিসি/ল্যাপটপে একাধিক মনিটর চালানো যাবে। এডভান্স মাল্টি মনিটর সেটিংসে বেশ কিছু অপশন এনেছে মাইক্রোসফট, উইন্ডোজ তার Monitor এর  হিস্টোরিও মনে রাখবে। অর্থাৎ একাধিক মনিটরে বিভিন্ন Window, tabs ওপেন রাখার পর সেগুলি Disconnect করে Reconnect করলে উইন্ডোজ আবার দ্বিতীয় মনিটরে পুর্বের Tabs/windows গুলোই চালু হবে।


 


*

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন

ads

ads