বাউন্স রেট কি? বাউন্স রেট কমানোর 19টি সেরা উপায়

 

what-is-bounce-rate-and-how-can-i-fix-mine


আপনার ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট কি খুব বেশি এবং আপনি কি আপনার বাউন্স রেট কমাতে চান?


অনেক ব্লগার বিশ্বাস করে যে বাউন্স রেট গুগল র‍্যাঙ্কিং হ্রাস বৃদ্ধিতে অন্যতম প্রভাব ফেলে কারণ অতিরিক্ত বাউন্স রেট সাইটের গুণমান ভাল না খারাপ সে সম্পর্কে Google এ তথ্য প্রদান করে। সেই তথ্য থেকে গুগল সাইটের র‍্যাঙ্কিং প্রদান করে থাকে।

তাই আজ এই নিবন্ধে আমি আপনাদের কিভাবে বাউন্স রেট কমাতে হবে সে সম্পর্কে বলব ।


তবে বাউন্স রেট কিভাবে কমানো যায় তা বলার আগে আমি বলব বাউন্স রেট কি, ভালো বাউন্স রেট কি হওয়া উচিত এবং কিভাবে হিসাব করা হয় সেগুলো নিয়ে আলোচনা করব।


বাউন্স রেট কি?

যখন কোন ব্যবহারকারী আপনার সাইটের যেকোনো পৃষ্ঠায় এসে অন্য পৃষ্ঠায় না গিয়ে আপনার সাইট ছেড়ে চলে যায়, তখন এটিকে বলা হয় একটি বাউন্স। আর বাউন্স রেট হল আপনার সাইটের মোট ব্যবহারকারীদের মধ্যে সেই বাউন্স হয়ে যাওয়া ব্যবহারকারীদের শতাংশ; যারা আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করে এবং অন্য পেজে না গিয়ে একই পৃষ্ঠা থেকে প্রস্থান করে।


আরও পড়ুন:

ব্ল্যাক হ্যাট এসইও এবং হোয়াইট হ্যাট এসইও কি?

SEO Trends 2022 : Google র‍্যাঙ্কিং-এ বেশি প্রভাব ফেলে এমন 5টি ফ্যাক্টর

 

একটি ভাল বাউন্স রেট কেমন হওয়া উচিত

এক কথায়– যতটুকু কম হয় ততই ভালো!

কিন্তু আপনি যদি জানতে চান সহনীয় পর্যায়ের বাউন্স রেট কেমন হওয়া উচিত?  এজন্য আপনার সাইট কোন ধরনের সেটার উপর নির্ভর করবে। কেননা বাউন্স রেট ওয়েবসাইটের ধরন অনুসারে পরিবর্তিত হয়। নীচে বাউন্স রেট এর ধরণগুলো উল্লেখ করা হলো:

80%+ অত্যন্ত খারাপ

70-80% প্রায় খারা

50 - 70% গড়ে ভালো

30 - 50% চমৎকার


সাধারণত একটি নতুন ব্লগের উচ্চ বাউন্স রেট থাকে। কারণ ভিজিটররা প্রথমে কন্টেন্ট স্ক্যান করে এবং তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য না পেলে তারা ব্লগ থেকে বেরিয়ে যায়। এছাড়া প্রোডাক্ট রিভিউ সাইটগুলোতেও সাধারণত উচ্চ বাউন্স রেট থাকে। যা তাদের জন্য সহনীয় পর্যায়ের। 

 

কিভাবে বাউন্স রেট চেক করবেন

এজন্য প্রথমে আপনি আপনার Google Analytics অ্যাকাউন্টে লগ ইন করুন। সেখান থেকে নিম্নে উল্লেখিত সোর্সগুলো ব্যবহার করে আপনার ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট পরীক্ষা করতে পারেন। আপনি স্ক্রিনশট দেখতে পারেন।

  • Behavior >> All Pages >> Bounce Rate

  • Acquisition >> Channels >> Bounce Rate

  • Acquisition >> Source/Medium >> Bounce Rate

  • Acquisitions >> AdWords >> Campaigns >> Bounce Rate

what-is-bounce-rate-uga


 

কিভাবে বাউন্স রেট কমাতে হয়

এটি একটি দুর্দান্ত কাজ যে আপনি সাইট ওনার হিসেবে আপনার সাইটের সার্চ পারফরমেন্স বাড়াতে কঠোর পরিশ্রম করছেন। তবে আপনাকে আপনার সাইটের বাউন্স রেট কম রাখার দিকেও অবশ্যই মনোযোগ দেওয়া উচিত।


সাইটে উচ্চ বাউন্স রেট থাকার অর্থ এটি বুঝায় যে আপনার কৌশলে কিছু ভুল আছে। যার কারণে আপনি দর্শকদের আকর্ষণ করতে পারছেন না বা দর্শকরা আপনার সাইটে ভাল ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা পাচ্ছে না। 


তাই নিচে বাউন্স রেট কিভাবে কমানো যায় তার 19 টি সেরা উপায় উল্লেখ করা হলো:

 

1. কন্টেন্ট কোয়ালিটি উন্নত করুন৷

উচ্চ বাউন্স রেট এর সবচেয়ে বড় কারণ - মানসম্পন্ন কন্টেন্ট এর অভাব।

আপনার কন্টেন্ট তথ্যবহুল বা মানসম্পন্ন না হলে, দর্শকরা অবিলম্বে আপনার সাইট ছেড়ে চলে যাবে।


সবসময় ইউনিক এবং মানসম্পন্ন কন্টেন্ট লিখুন। এছাড়াও, আপনার নিবন্ধটি আকর্ষণীয় হওয়া উচিত যাতে দর্শকেরা আপনার কন্টেন্ট আনন্দের সাথে পড়তে পারে।

গুণগত কন্টেন্ট লেখার ছোট টিপস:

1.1. কন্টেন্ট দৈর্ঘ্য - আপনার নিবন্ধটি কমপক্ষে 1000 শব্দের মধ্যে এবং তথ্যবহুল রাখার চেষ্টা করুন। দীর্ঘ কন্টেন্ট সার্চ ইঞ্জিনে ভাল স্থান পায়।


1.2. কীওয়ার্ড স্টাফিং করবেন না - এটি আপনাকে কন্টেন্টকে unnatural করে তোলে এবং পাঠকের উপর একটি খারাপ User experience এর প্রভাব পড়ে যায়। আপনার কন্টেন্টে কীওয়ার্ডের ঘনত্ব 1.5% - 2% রাখুন। এটি ছাড়াও, আপনার কন্টেন্টে ফোকাস কীওয়ার্ডের সাথে সম্পর্কিত কীওয়ার্ডগুলি ব্যবহার করুন।


1.3. আকর্ষণীয় শিরোণাম লিখুন - নিবন্ধটি লেখার পর আপনার শিরোনামটি ভালভাবে অপ্টিমাইজ করুন। কারণ 50% থেকে 60% এর বেশি লোক প্রথমে পোস্টের শিরোনাম দেখে তারপরে ক্লিক করে। সর্বদা শিরোণামে আপনার ফোকাস কীওয়ার্ড যোগ করুন।


1.4. মেটাডেসক্রিপশন অপ্টিমাইজ করুন - এটি আপনার ব্লগ পোস্টের সংক্ষিপ্ত বিবরণ। এটি সার্চ ফলাফলের শিরোনামের নীচে প্রদর্শিত হয়। এটি আপনার ব্লগ পোস্টে CTR বাড়াতে সাহায্য করে। এতে অবশ্যই আপনার ফোকাস কীওয়ার্ড যোগ করুন।


1.5. অনুচ্ছেদ সংক্ষিপ্ত রাখুন - দীর্ঘ এবং বড় অনুচ্ছেদ পাঠককে পড়তে অনুৎসাহিত করে। পাঠকরা ছোট এবং সাবলিল সুন্দর অনুচ্ছেদ পছন্দ করে। তাই সবসময় আপনার অনুচ্ছেদ ছোট এবং বন্ধুত্বপূর্ণ লেখা রাখার চেষ্টা করুন।

 

আরও পড়ুন:

ডোমেইন অথরিটি কি? কিভাবে ডোমেইন অথরিটি বাড়ানো যায়?


2. ওয়েবসাইট লোডিং গতি বৃদ্ধি করুন।

দ্রুত লোডিং দর্শকদের আরও ভাল User experience প্রদান করে।


ধীর লোডিং ওয়েবসাইটগুলি কেউ দেখতে পছন্দ করে না। আপনার সাইট ধীরে ধীরে লোড হলে দর্শকরা দ্রুত আপনার সাইট ছেড়ে চলে যাবে। এবং ফলস্বরূপ এটি আপনার ওয়েবসাইট বাউন্স রেট বাড়িয়ে দিবে।


আর সাইট স্পিড একটি Google র‌্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর । যার কারণে দ্রুত লোডিং সাইটটি গুগল সার্চে ভালো অবস্থানে থাকবে।


এজন্য আপনার সাইটের লোডিং গতি উন্নত করুন। ওয়েবসাইট লোডিং গতি উন্নত করার জন্য এখানে কিছু টিপস নোট করে নিতে পারেন:

2.1. PHP 7.2 এ আপগ্রেড করুন

2.2. আপনার ছবির সাইজ অপ্টিমাইজ করুন

2.3. শুধুমাত্র দরকারী প্লাগইন রাখুন

2.4. অপ্রয়োজনীয় মিডিয়া ফাইল মুছুন

2.5. CSS এবং JS ফাইল ছোট করুন

2.6. একটি ভাল Cache প্লাগইন ব্যবহার করুন

2.7. রিডাইরেক্ট মিনিমাইজ করুন

2.8. Lightweight theme ব্যবহার করুন।

2.9. CDN ব্যবহার করুন।

2.10. একটি ভাল হোস্টিং ব্যবহার করুন। 

 

3. ব্লগের ডিজাইন Clean ও Simple রাখুন

আপনার ব্লগ ডিজাইন Clean ও Simple রাখুন। রঙিন সাইট পাঠককে বিভ্রান্ত করে। আপনার ব্লগ/ওয়েবসাইটের জন্য একটি ক্লিন ও রেসপনসিভ থিম নির্বাচন করুন।


ব্লগের ফন্টগুলি যাতে খুব ছোট না হয় তা নিশ্চিত করুন। যদিও মানুষ ফন্টের দিকে বেশি মনোযোগ দেবে না। কিন্তু তারা আপনার ব্লগ থেকে চলে যাবে (আপনার বিষয়বস্তু যতই ভালো হোক না কেন)। এমন একটি ফন্ট ব্যবহার করুন যা দর্শক সহজেই স্ক্যান করতে পারে।


আপনি যদি আপনার body ফন্টের সাইজ পরিবর্তন করতে চান তবে আপনি থিমের style.css এ গিয়ে এটি পরিবর্তন করতে পারেন। অথবা ওয়ার্ডপ্রেস কাস্টমাইজারের CSS বিভাগে নিম্নলিখিত কোডটি যোগ করুন।

body {

font-size: 18px;

}

 

4. রিলেটেড পোস্ট ব্যবহার করুন

আপনি যদি দীর্ঘ সময়ের জন্য আপনার সাইটে ভিজিটর রাখতে চান তবে রিলেটেড পোস্টগুলি আপনাকে অনেক সাহায্য করতে পারে।


রিলেটেড পোস্ট প্রায়ই কন্টেন্ট এর শেষে প্রদর্শিত হয়।


আপনি যদি একজন ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহারকারী হন তাহলে আপনি আপনার সাইটে রিলেটেড পোস্ট যুক্ত করার জন্য প্লাগইন ব্যবহার করতে পারেন।

 

আরও পড়ুন: SERP কি এবং এটি কিভাবে কাজ করে?


5. ব্রোকেন লিঙ্ক ঠিক করুন

ব্রোকেন লিঙ্কগুলি user experience-এ ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে। ব্রোকেন লিঙ্ক ঠিক করে আপনি বাউন্স রেট কমাতে পারেন এবং আপনার দর্শকদের উন্নত user experience দিতে পারেন।


যখন ওয়েবসাইটের কোনো পেজ সরানো বা ডিলিট করা হয় তখন সাইটে ব্রোকেন লিঙ্কের সমস্যা তৈরী হয়। দর্শকরা যখন এই ধরনের লিঙ্কগুলিতে ক্লিক করেন তখন তারা “404 page not found error” মেসেজ এর দেখা পান। ফলস্বরূপ তারা দ্রুত সাইট হতে প্রস্থান করেন এবং সাইটের বাউন্স রেট বেড়ে যায়।


তবে WordPress সাইট হলে আপনি ব্রোকেন লিঙ্ক চেকার নামে একটি বিনামূল্যের প্লাগইন ব্যবহার করতে পারেন। যা আপনাকে আপনার ব্লগে থাকা ব্রোকেন লিঙ্কগুলি ঠিক করতে সাহায্য করবে৷ এছাড়াও এই প্লাগইনটি সার্চ ইঞ্জিন যেন ব্রোকেন লিংকগুলি অনুসরণ না করে তার জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে 'nofollow' ট্যাগ সেট করে।

 

6. নতুন ট্যাব/উইন্ডোজে এক্সটার্নাল লিঙ্ক খুলুন

অন্য ওয়েবসাইটের সাথে নিজের সাইটকে লিংক করা এসইও এর একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি। এটি আপনার কন্টেন্টকে আরও কার্যকরী করে তোলে। উপরন্তু, এটি সার্চ ইঞ্জিনগুলিকে আরও ভালভাবে বুঝতে সাহায্য করে যে আপনার কন্টেন্টটি কি বিষয়ের।


উচ্চ মানের এক্সটার্নাল লিঙ্কগুলিতে লিঙ্ক করা SEO এর জন্য খুবই কার্যকর হয়। কিন্তু আপনি যদি সেগুলিকে নতুন ট্যাব/উইন্ডোজে না খোলেন তাহলে দর্শকরা আপনার সাইট ছেড়ে চলে যাবে৷


তাই সবসময় নতুন ট্যাব/উইন্ডোতে এক্সটার্নাল লিঙ্ক খুলুন। এই কৌশলটি আপনার ওয়েবসাইটের বাউন্স রেটকে অনেকাংশে কমাতে সাহায্য করবে।

 

7. ইন্টার্নাল লিঙ্ক

ইন্টার্নাল লিঙ্কিং শুধুমাত্র আপনার ওয়েবসাইট এসইও এবং পেজভিউ উন্নত করার পাশাপাশি আপনার কন্টেন্টকে দর্শকদের জন্য আরও গুরুত্বপূর্ন করে তোলে এবং বাউন্স রেট কমাতে সাহায্য করে। একই ডোমেইনের মধ্যে একটি পৃষ্ঠার সাথে অন্য পৃষ্ঠা লিঙ্ক করাকে অভ্যন্তরীণ বা ইন্টার্নাল লিঙ্কিং বলে।


আপনার কন্টেন্টে কম কিন্তু প্রাসঙ্গিক লিঙ্ক যুক্ত করুন। বেশী এবং অপ্রাসঙ্গিক লিঙ্কিং আপনার এসইও এবং বাউন্স রেট এর উপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে।

 

8. সাইট ক্রস-ব্রাউজার কম্পেটিবল রাখুন

আপনার সাইটটি ক্রস-ব্রাউজার কম্পেটিবল কিনা পরীক্ষা করুন। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ধরুন আপনার প্রিয় ব্রাউজার হল Chrome তার মানে এই নয় যে আপনার সকল দর্শকরা এটি ব্যবহার করছে।


আপনি ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারে আপনার সাইট খুললে, আপনার সাইটটি ব্রোকেন হিসাবে প্রদর্শিত হবে। এখানে নীচে আমি দুটি টুল উল্লেখ করেছি যেগুলি ব্যবহার করে আপনি চেক করতে পারেন যে আপনার সাইটটি সমস্ত ব্রাউজারে দুর্দান্ত দেখাচ্ছে।

8.1. ব্রাউজারস্ট্যাক

8.2. ব্রাউজারলিং


9. আপনার সাইট প্রতিক্রিয়াশীল করুন

আপনার সাইট কি রেসপন্সিভ? দর্শকরা যখন তাদের মোবাইল থেকে আপনার সাইটে আসে তখন কি তাদের মোবাইলে নিখুঁত দেখায়?

 

প্রতিটি ওয়েবপেজই রেসপন্সিভ থাকার অর্থ হলো দর্শকের ইউজার এক্সপেরিয়েন্স বৃদ্ধি করে তোলা। ওয়েব পেজের ডিজাইন প্রত্যেকটা ডিভাইস থেকেই যেনো 100% রেসপন্সিভ হয়। অর্থাৎ কম্পিউটারের পাশাপাশি মোবাইল ফ্রেন্ডলি ডিজাইন হওয়া জরুরি।

 

বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ মানুষই মোবাইল ব্যবহার করে ওয়েবপেজ ভিজিট করে থাকে। তাই মোবাইল ফ্রেন্ডলি ডিজাইন ইউজার এক্সপেরিয়েন্স বদ্ধি করবে এবং ওয়েবপেজের বাউন্স রেট কমিয়ে দেবে।

 

কিন্তু আপনার সাইটটি যদি মোবাইলে পুরোপুরি দেখা না যায় তবে দর্শকরা অবিলম্বে আপনার সাইট ছেড়ে চলে যাবে। এটি আপনার বাউন্স রেট বাড়িয়ে দেবে।


আপনার সাইট মোবাইল বান্ধব কিনা তা পরীক্ষা করতে, আপনি Google এর তৈরি মোবাইল টেস্টিং টুল ব্যবহার করতে পারেন ৷ আপনার সাইটটি মোবাইল ফ্রেন্ডলি না হলে আপনাকে আপনার সাইটে একটি রেসপনসিভ ওয়ার্ডপ্রেস থিম ইনস্টল করতে হবে।

 

 

10. সাইটে অতিরিক্ত এড ব্যবহার না করা

কোন ভিজিটরই ওয়েবসাইটে এড দেখার জন্য আসে না। তারা মূলত তাদের প্রয়োজনীয় কন্টেন্ট পড়তে বা জানার উদ্দেশ্যেই ওয়েবসাইটে আসে। 

 

আপনি যদি আপনার সাইটে বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকলে সেগুলো সঠিক জায়গায় রাখার চেষ্টা করুন।

 

কিন্তু অনেক সাইট বেশী টাকা পাওয়ার আশায় প্রচুর বিজ্ঞাপন দেখায়। যা তাদের সাইটের গতি কমিয়ে দেয় এবং পাঠককে বিভ্রান্ত করে – বিশেষ করে পপআপ বিজ্ঞাপন। এটি বাউন্স রেটকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করে।

 

আপনি যদি আপনার সাইটে পপআপ বিজ্ঞাপন ব্যবহার করেন তবে এটি ভিজিটরকে অন্য URL-এ রিডাইরেক্ট করে। আর এ ধরনের বিজ্ঞাপন দর্শকরা একেবারেই পছন্দ করেন না।


আরও পড়ুন:

এসইও কি? Search Engine Optimization কিভাবে করতে হয়?

 

11. সঠিকভাবে হেডিং ট্যাগ ব্যবহার করুন

হেডিং ট্যাগ আপনাকে একটি সহজে পড়তে পারার ব্লগ পোস্ট তৈরি করতে সহায়তা করে। ধরুন আপনার 5000-6000 শব্দযুক্ত একটি দীর্ঘ ব্লগ পোস্ট আছে এবং তাতে আপনি Heading Tags সঠিকভাবে ব্যবহার করেননি তাহলে ভিজিটর এর এটি পড়তে অসুবিধা হবে।

 

H1 ট্যাগ সার্চ ইঞ্জিনগুলিকে বুঝতে সাহায্য করে আপনার পৃষ্ঠাটি কী বিষয়ে এবং সে অনুযায়ী র‌্যাঙ্কিং বাড়াতে সহায়তা করে। তবে H1 ট্যাগ একবারের বেশি ব্যবহার করবেন না।

 

অনেক ওয়ার্ডপ্রেস থিম আছে যেগুলো শিরোনামের জন্য H1 ট্যাগ ব্যবহার করে না। আপনি যদি আপনার ব্লগ বা ওয়েবসাইটের জন্য তেমন থিম ব্যবহার করেন তবে আপনার শিরোনামের জন্য H1 ট্যাগ ব্যবহার করা উচিত।

 

12. প্রবন্ধের জন্য ছবি ব্যবহার করুন

কথায় আছে একটি ছবি হাজার শব্দের কথা বলে। ফলে ছবিগুলো ওয়েবসাইটে ভিজিটরদেরকে অনেক সময় ধরে রাখে। এছাড়া আর্টিকেলে ছবির ব্যবহার করাটা SEO’র ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। 

 

যদি আপনার কন্টেন্ট খুব দীর্ঘ হয় (4,000+ শব্দ) তাহলে ছবি ব্যবহার করুন। যাতে দর্শকরা বিরক্ত না হয়।

 

কিন্তু আপনি গুগল ইমেজ ব্যবহার করতে পারবেন না। এগুলি কপিরাইটযুক্ত হতে পারে এবং পরে কপিরাইট সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

 

অনলাইনে অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে ( FreeDigitalPhotos, MorgueFile, Pixabay, Pexels ) যেগুলি বিনামূল্যে স্টক ছবি অফার করে৷

 

আপনার কন্টেন্টের জন্য উচ্চ মানের ছবি ব্যবহার করুন এবং আপলোড করার আগে সেগুলিকে কম্প্রেশ এবং রিসাইজ করতে ভুলবেন না৷

 

13. সাইটে সার্চ বাটন যুক্ত করুন

যদি একজন দর্শক আপনার সাইটে আসে এবং সে যে নিবন্ধটি খুঁজছিলেন তা খুঁজে না পান তাহলে সার্চ বাটনটি হল তার সর্বশেষ জিনিস; যা একজন দর্শক আপনার সাইট ছেড়ে যাওয়ার আগে চেষ্টা করবে।


ডিফল্টভাবে ওয়ার্ডপ্রেস একটি সার্চ উইজেট দেয়; যা আপনি আপনার ফুটার বা সাইডবারে রাখতে পারেন। এছাড়াও অনেক সার্চ বাটনযুক্ত থিম আছে; যা আপনি আপনার মেনু আইটেমগুলিতে দেখাতে পারেন।

 

14. প্রকৃত অডিয়েন্সদের টার্গেট করুন

সাইটে ভুল ভিজিটর আসলে অবশ্যই বাউন্স রেট বেশি হবে। কারণ তারা আপনার ওয়েবপেজে আসবে এবং অন্য পেজে না গিয়ে বা কন্টেন্ট না পড়ে সাইট থেকে বেরিয়ে যাবে।


সেজন্য বাউন্স রেট কমাতে সঠিক দর্শকদের আকৃষ্ট করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর এজন্য কীওয়ার্ড অপটিমাইজেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।


উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি চশমার জন্য আপনার পোস্ট অপ্টিমাইজ করেন তাহলে চশমা সম্পর্কিত কীওয়ার্ড ব্যবহার করুন। এর সাথে চশমা সার্চকরা দর্শকরা ফলাফলে খুশি হবেন। কিন্তু চশমা কেইস এবং চশমা ফ্রেম এর জন্য এটি অপ্টিমাইজ করবেন না যেগুলি আপনিও বিক্রি করেন। এতে বাউন্স রেট বাড়বে।

 

15. ভিডিও ব্যবহার করুন

ভিডিওগুলো সাইটের বাউন্স রেট কমাতে শক্তিশালী টুল এর মত কাজ করে। ভিডিওগুলি টেক্সট বা ইমেজ এর চেয়ে বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করে। আপনি আপনার ব্লগ পোস্টের একটি ভিডিও তৈরি করতে পারেন এবং এটি আপনার ব্লগ পোস্টে যোগ করতে পারেন। এটি আপনার বাউন্স রেটকে অনেক কমিয়ে দেবে।

 

16. পুরানো কন্টেন্ট আপডেট রাখুন

আপনার যদি পুরানো হাই-ট্রাফিক পোস্ট থাকে তা নতুন তথ্য, ছবি এবং ভিডিও দিয়ে আপডেট করুন। এটি আপনার ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট কমিয়ে দেয়।


আপনার পুরানো কন্টেন্টকে নতুন কীওয়ার্ড এবং সর্বশেষ তথ্য ও ছবি দিয়ে আপডেট করুন। তারপর সেগুলি আপনার নতুন পাঠকদের সাথে এবং সোশ্যাল মিডিয়া সাইটগুলিতে শেয়ার করুন৷

 

17. বুদ্ধির সাথে পপ-আপ ব্যবহার করুন

পপ-আপগুলি (অপ্ট-ইন ফর্ম বা অন্যান্য) ইউজারদের জন্য খারাপ user experience তৈরি করে। কিন্তু অনেক ব্যবহারকারী আছেন যারা পপআপ পূরণ করে সাইটে প্রবেশ করে। এর কারণ হলো আপনার কন্টেন্ট তথ্যবহুল হওয়ায় ইউজাররা পপআপ পছন্দ না করলেও আপনার সাইটটি ছেড়ে যেতে পারে না।

 

তবে ইমেইল লিস্ট বাড়াতে অপ্ট-ইন ফর্ম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আপনার সাইট বা ব্লগে এটি বুদ্ধিমানের সাথে ব্যবহার করুন। এছাড়াও এটির জন্য আপনি একটি টাইমার সেট করতে পারেন।

 

আরও পড়ুন:

কিভাবে আপনার ব্লগ/ওয়েবসাইটকে গুগলের প্রথম পেজ-এ নিয়ে আসবেন?

 

18. সাইটটি HTTPS-এ রাখুন

Chrome 68 এবং তার উপরে সমস্ত নন-HTTPS সাইটগুলিকে "নিরাপদ নয়" হিসাবে চিহ্নিত করে।

What-is-bounce-rate-not-secure


তাই এটাও বাউন্স রেট বৃদ্ধির একটা কারণ হতে পারে। কারণ ভিজিটররা আপনার সাইট ছেড়ে যাচ্ছে। তাই HTTPS এত গুরুত্বপূর্ণ!

আপনি যদি এখনও আপনার সাইটে HTTP ব্যবহার করেন, তাহলে অবিলম্বে এটি HTTPS-এ পরিবর্তন করুন।

 

19. কালো টেক্সট এবং সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড ব্যবহার করুন

আপনার ব্লগের টেক্সট এবং ব্যাকগ্রাউন্ডের জন্য রঙিন রঙ ব্যবহার করবেন না। কারণ এটি আপনার বাউন্স রেটকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তবে দেখতে ভালো লাগলেও পাঠকের জন্য পড়তে অসুবিধা হবে এবং তাদের ভালো লাগবে না। 

 

দর্শকের সাধারণত একটি পরিষ্কার এবং সাধারণ ব্লগ পছন্দ করেন। অতএব, আপনার লেখার জন্য সর্বদা কালো রঙ এবং ব্যাকগ্রাউন্ডের জন্য সাদা রঙ ব্যবহার করুন।

 

উপসংহার

এই নিবন্ধে, আমি আপনাকে বাউন্স রেট কমানোর 20 টি উপায় সম্পর্কে বলেছি। কিন্তু উচ্চ-মানের কন্টেন্ট ছাড়া আপনি এটি কমাতে পারবেন না।

 

যদি আমার কোনো কৌশল বাদ পড়ে থাকে তাহলে মন্তব্যে আমাকে জানান।

একটি ছোট অনুরোধ, এই নিবন্ধটি আপনার জন্য সহায়ক হতে প্রমাণিত হলে শেয়ার করতে ভুলবেন না!


*

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন

ads

ads