হোস্টিং কি? হোস্টিং এর প্রকারভেদ ও হোস্টিং এর দাম নিয়ে বিস্তারিত .....

 

হোস্টিং এবং ডোমেইন ছাড়া কোনো ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করা সম্ভব নয়। আজকের আর্টিকেলে আমরা হোস্টিং কি, ওয়েব হোস্টিং কি, হোস্টিং কত প্রকার এবং হোস্টিং এর দাম কেমন এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো।


আপনি যদি ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরীর জন্য হোস্টিং কিনতে চান, তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য।


Hosting কি


কোন ওয়েবসাইট বা ব্লগ বানানোর জন্য, ওয়েবসাইট বা ব্লগের সমস্ত ডাটা যেমন-টেক্সট, ভিডিও, ইমেজ ইত্যাদি যেখানে জমা রাখা হয় সেটিকে হোস্টিং বলে। কোন ব্লগ বা ওয়েবসাইটের সমস্ত টেক্সট, ভিডিও, ইমেজ, ডকুমেন্টস, অডিও ফাইল ইত্যাদি সব কিছু ঐ ওয়েবসাইট বা ব্লগ এর জন্য নির্ধারিত হোস্টিং সার্ভারের জায়গাতে জমা হয়।


আর ওয়েবসাইট বানানোর জন্য একটি ডোমেইন নেম এর প্রয়োজন হয়। যখন কোনো ইউজার সেই নির্ধারিত ডোমেইন নেমটি ইন্টারনেট সার্চ করে তখন ওই ওয়েবসাইট বা ব্লগের ডোমেইন নেমটি হোস্টিং সার্ভার এ রিডাইরেক্ট করে এবং এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট এর সমস্ত ডাটা ইউজারকে দেখায়।


অর্থাৎ ডোমেইন নেমের সাহায্যে যে সমস্ত ডাটা ইন্টারনেটে আমরা দেখতে পায়, সে সকল ডাটা ওয়েব সার্ভার বা ওয়েব হোস্টিং এ জমা করা থাকে।


উদাহরণ হিসেবে:

ধরুন আপনি একটি দোকান খুলতে চান। কিন্তু দোকান খোলার জন্য একটি জায়গার প্রয়োজন, যেখানে আপনি আপনার দোকানের প্রয়োজনীয় সমস্ত প্রোডাক্ট এবং দোকানের যাবতীয় সরঞ্জামগুলি রাখতে পারবেন। আর দোকানটি বা জায়গাটি কাস্টমারদের কাছে পরিচয় করিয়ে দেয়ার জন্য দোকানের একটি যথাযথ নাম দরকার। এতে যে কোন কাস্টমার ঐ নির্দিষ্ট নামের নির্দিষ্ট জায়গাতে গিয়ে আপনার কাছ থেকে সরাসরি প্রোডাক্টগুলি দেখতে ও কিনতে পারবে।


এখানে দোকানটিকে বা দোকানের জায়গাটিকে আমরা হোস্টিং হিসেবে এবং দোকানের নামটি ডোমেইন নেম হিসেবে যদি ধরে নিই। এর ফলে দোকানের নামটি যখন কাস্টমারদের কাছে পরিচিতি পায় তখন তারা উক্ত নামের দোকানটি কোন জায়গায় আছে তা জেনে নিয়ে সেখানে যায় এবং পছন্দ অনুযায়ী কেনাকাটা করে থাকে।


ঠিক সেই রকম অনলাইনে কোন ওয়েবসাইট বানানোর জন্যও হোস্টিং এর প্রয়োজন হয়। কোন নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের সমস্ত ডাটাগুলো, হোস্টিং এ জমা হয়। কোন ইউজার যখন নির্দিষ্ট ডোমেইন নেম বা ওয়েবসাইট এর নাম লিখে ইন্টারনেটে সার্চ করে, তখন ডোমেইন নেম টি ওয়েব সার্ভারে পয়েন্ট করে এবং ইউজারকে ওই ওয়েবসাইটের সমস্ত ডাটা গুলি দেখায়।


হোস্টিং কাকে বলে


হোস্টিং হল এক প্রকার ওয়েব সার্ভার। যেখানে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট বা ব্লগের সকল ডাটা স্টোর করে রাখা হয়। কোনো ব্যবহারকারী নির্দিষ্ট ডোমেন নেম ইন্টারনেটে সার্চ করলে, ঐ ডোমেইন নেম বা ওয়েবসাইট এর নাম এর বিপরীতে বরাদ্দ থাকা হোস্টিং এর যে জায়গা হতে ওই ওয়েবসাইট বা ব্লগের সমস্ত ডাটা গুলি দেখতে পারে। ডোমেইন এবং হোস্টিং এর পারস্পরিক কানেকশন এর মাধ্যমেই কোন ওয়েবসাইট, ইউজার এর সামনে ফুটে ওঠে।


অর্থাৎ ইন্টারনেট দুনিয়ায় আপনার ওয়েবসাইটের সমস্ত টেক্সট, ইমেজ, ভিডিও, অডিও ইত্যাদি ডাটা গুলি রাখার জন্য যে জায়গার প্রয়োজন হয়, এবং সেই জায়গাটাকেই হোস্টিং বলে।


হোস্ট কি বা হোস্ট কাকে বলে


একটি কম্পিউটার যখন কোন একটি নেটওয়ার্কের মধ্যে কানেক্ট হয় তখন তাকে হোস্ট বলা হয়। আবার কখনো কখনো কম্পিউটার বা অন্য যে কোন ডিভাইস এর ইন্টার নেটওয়ার্কের সাথে কানেক্ট হলেও তাকে হোস্ট বলা হয়ে থাকে। সেটি মোবাইল, ট্যাবলেট বা নেটওয়ার্ক সাপোর্টেড অন্য যে কোন ডিভাইস হতে পারে। হোস্ট বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন: নেটওয়ার্ক হোস্ট, ওয়েব হোস্ট ইত্যাদি।


একটি হোস্ট কে অন্য একটি হোস্ট এর সাথে কানেক্ট করার জন্য নেটওয়ার্ক এর প্রয়োজন হয়। নেটওয়ার্কের সাহায্যে এক বা একাধিক হোস্ট এর মধ্যে কানেকশন তৈরি করে কমিউনিকেশন করা হয়।


ডোমেইন এবং হোস্টিং হচ্ছে এক ধরনের ওয়েব হোস্ট। ওয়েব হোস্ট বিভিন্ন ধরনের হোস্টিং সার্ভার কে দেখাশোনা করে এবং বিভিন্ন কাস্টমারদের হোস্টিং সার্ভিস প্রোভাইড করে।


উদাহরণ হিসেবে: একটি ডোমেইনকে যখন কোন একটি হোস্টিং এর সাথে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে কানেক্ট করা হয় তখন এটি ওয়েব হোস্ট এর মধ্যে পড়ে।



হোস্টিং কত প্রকার


হোস্টিং সাধারনত দুই প্রকারের হয়ে থাকে।

ফ্রি হোস্টিং

এবং

পেইড হোস্টিং


ফ্রি হোস্টিং মূলত বিনামূল্যের হয়। অর্থাৎ ফ্রি হোস্টিং এর জন্য আপনাকে কোনো টাকা খরচ করতে হবে না। 


আর পেইড হোস্টিং এর জন্য আপনাকে টাকা খরচ করে ব্যবহার করতে হবে। এখন প্রশ্ন হলো যে ফ্রি হোস্টিং থাকতে টাকা দিয়ে কেন পেইড হোস্টিং কিনবো? এর উত্তর হল, ফ্রি হোস্টিং এ আপনি স্টোরেজ ও ব্যান্ডউইথ অনেক সীমিত হয়ে থাকে। ফলে আপনার ওয়েবসাইট লোড নিতে অনেক সময় নিবে। তাছাড়া ফ্রি হোস্টিং এ কোনো সিকিউরিটি থাকে না। ফলে আপনার ওয়েবসাইটের যাবতীয় তথ্য যেকোনো সময় হ্যাক হয়ে যেতে পারে। ইত্যাদি কারন বিবেচনা করে প্রায় সকলে পেইড হোস্টিং কিনে থাকে।


সুযোগ সুবিধার উপর নির্ভর করে পেইড হোস্টিং আবার বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

Dedicated hosting

VPS Hosting

Shared hosting

Managed Hosting

Cloud Hosting

Reseller Hosting


উল্লিখিত হোস্টিং সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো। যা থেকে কোন্ হোস্টিং এর কি কাজ এবং কোন্ হোস্টিং এর দাম কেমন সেগুলি খুব সহজভাবে জানতে পারবেন।


Dedicated Hosting


যদি একটি পুরো সিপিইউ হোস্টিং হিসেবে নেওয়া হয় তবে তাকে ডেডিকেটেড হোস্টিং বলে। একটি নির্দিষ্ট সিপিইউ-তে সাধারণত নির্দিষ্ট পরিমানের RAM, hard disk, processor এগুলি থাকে। যদি কোন ওয়েবসাইটের মালিক পুরো সিপিইউ-কে হোস্টিং রূপে ব্যবহার করে তবে তাকে ডেডিকেটেড হোস্টিং বলা হয়। 



উদাহরণ হিসেবেঃ

ধরুন আপনি একটি বাড়ি কিনলেন। যেহেতু বাড়িটি আপনি নিজে নিয়েছেন তাই পুরো বাড়িটি আপনি একাই ব্যবহার করতে পারবেন। এখানে আপনার বন্ধু বা আত্মীয় কেউ থাকতে পারবে না। এখন এই পুরো বাড়িটি হল Dedicated Hosting। আপনি এখানে আপনার সমস্ত, নিজস্ব মালপত্র বাড়ির মধ্যে জমা করতে পারেন।


এই ধরনের হোস্টিং এর মূল্য প্রতি মাসে ১৩০০০-৩৫০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।

Dedicated Hosting এর সুবিধাঃ


  • এই হোস্টিং এর উপর ইউজারের সবথেকে বেশি কন্ট্রোল থাকে।
  • এতে সবথেকে বেশি সিকিউরিটি পাওয়া যায়।
  • ট্রাফিক লিমিটেশন নেই।
  • সাইট ডাউন হওয়ার সুযোগ নেই।
  • অন্যান্য হোস্টিং এর তুলনায় অনেক বেশি ফাস্ট লোডিং হয়।
  • ইউজার যে কোন জিনিস খুবই সহজেই অ্যাক্সেস করতে পারে।


Dedicated Hosting এর অসুবিধাঃ


  • এই হোস্টিং সবথেকে বেশি ব্যয়বহুল।
  • এটি কন্ট্রোল/ব্যবহার করার জন্য যথেষ্ট টেকনিক্যাল নলেজ এর দরকার। না হলে আপনাকে টেকনিশিয়ান ভাড়া করে কন্ট্রোল করতে হবে।


VPS Hosting


কোন ডেডিকেটেড সিপিইউ-কে ভাগ করে যখন আলাদা আলাদা Submachine বা ভার্চুয়াল মেশিন বানানো হয়, তখন সেগুলিকে ভিপিএস হোস্টিং বলে। ধরা যাক কোনো ডেডিকেটেড সিপিইউ-তে ৮ জিবি RAM আছে, তখন ভিপিএস সেই ডেডিকেটেড সিপিইউটিকে আলাদা আলাদা ওয়েবসাইট ইউজারের জন্য RAM টিকে ভাগ করে সকলকে ব্যবহার করার অনুমতি দিয়ে থাকে।


সুতরাং যখন কোন CPU-কে ভাগ করে কোনো Sub-Machine বা Virtual Machine তৈরি করে, বিভিন্ন ইউজারকে তাদের ওয়েবসাইট অ্যাক্সেস করার অনুমতি দেওয়া হয় তখন তাকে ভিপিএস হোস্টিং বলা হয়।


উদাহরণ হিসেবে:

আপনি একটি বাড়ি ভাড়া নিলেন। সেই বাড়িটিকে 2-3 জন বন্ধুর সাথে ভাগ করে নিলেন। আর প্রত্যেকে আলাদা আলাদা রুমে থাকা শুরু করলেন। সেই বাড়ির ভাড়াও আপনারা সকলে মিলে মেটাবেন এবং সকলের যার যা মালপত্র আছে তা সেই বাড়ির মধ্যে রাখতে পারবেন। অর্থাৎ আপনি ও আপনার বন্ধুদের জন্য পৃথকভাবে বরাদ্দ করা রুমগুলো এক-একটি ভিপিএস হোস্টিং।


এই ধরনের হোস্টিং এর জন্য প্রতি মাসে ৪০০০ -২৬০০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

VPS Hosting এর সুবিধাঃ

  • ডেডিকেটেড হোস্টিং ছাড়া অন্যান্য হোস্টিং এর চেয়ে ভিপিএস হোস্টিং ব্যাবহারকারি ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড অনেক বেশি থাকে।
  • নিজেই ফুল কন্ট্রোল করতে পারবেন।
  • ওয়েবসাইটের ডাটা অনুযায়ী memory upgrade এবং ব্যান্ডউইডথ পরিবর্তন করতে পারবেন।
  • এই ধরনের হোস্টিং-এ আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং উচ্চ পারফরম্যান্সের হার্ডওয়ার ব্যবহার করার কারণে ওয়েবসাইট এর Privacy এবং Security বেশি।


VPS Hosting এর অসুবিধাঃ

  • টেকনিক্যাল নলেজ অবশ্যই প্রয়োজন।
  • ডেডিকেটেড হোস্টিং এর চেয়ে কম সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়।



Shared Hosting


যখন কোন ভিপিএস হোস্টিং-কে আরো আলাদা আলাদা ইউজারের মধ্যে শেয়ার বা ভাগ করে দেয়া হয় তখন তাকে শেয়ার্ড হোস্টিং বলে।


সুতরাং ডেডিকেটেড হোস্টিং কে ভাগ করে ভিপিএস হোস্টিং এবং ভিপিএস হোস্টিং-কে আরো ভাগ করলে শেয়ার্ড হোস্টিং তৈরি হয়।


শেয়ার্ড হোস্টিংয়ে একটি CPU-কে অনেক ইউজার এর সাথে শেয়ার করা যায়। কিন্তু একটি শেয়ার্ড হোস্টিং কতজনের সাথে শেয়ার করা হবে সেটি সেই হোস্টিং কোম্পানি নির্ধারণ করে।


উদাহরণ হিসেবেঃ

আপনি এবং আপনার বন্ধুরা যে বাড়িটা ভাড়া নিয়েছেন সেখানে সবার জন্য আলাদা রুম রয়েছে। এখন যদি অপর আরো একটি নতুন বন্ধু আসে এবং বাড়িতে আলাদা কোন রুম না থাকায় আপনাকে রুমটি শেয়ার/ভাগ করে থাকতে হয়, তখন তাকে শেয়ার্ড হোস্টিং বলে। এখানে একটি রুমের মধ্যেই আপনি আপনার একাধিক নতুন বন্ধুকে থাকার অনুমতি দিতে পারেন।


শেয়ার হোস্টিং এর জন্য প্রতি মাসে ২৫০-৬০০ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়।


Shared Hosting এর সুবিধা

  • Set Up করা অনেক সহজ।
  • নতুন ব্লগ এর জন্য সবথেকে ভালো।
  • খুব সহজেই কন্ট্রোল করা যায় বিধায় এক্সপার্ট না হলেও চলবে।
  • এটি অনেক সাশ্রয়ী।


Shared Hosting এর অসুবিধা

  • সিকিউরিটি খুবই কম।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে Resource পাওয়া যায় না তাই কাস্টমাইজড করার তেমন অপশন থাকে না।
  • মাঝে মাঝে ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড কমে যায়।



Managed ওয়েব হোস্টিং


কোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান তার ব্যবসার সুবিধার জন্য যে ধরনের ওয়েব হোস্টিং ব্যবহার করে থাকে তাকে ম্যানেজ ওয়েব হোস্টিং বলা হয়।


যেমন আমরা ব্লগ বানানোর জন্য বেশীর ভাগ ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করি। কিন্তু ওয়ার্ডপ্রেস কোম্পানির ওয়ার্ডপ্রেস হোস্টিং নামক এক ধরনের নিজস্ব হোস্টিং সার্ভিস আছে, যেটি ওয়ার্ডপ্রেস কোম্পানি তার ইউজারদের জন্য তৈরি করেছেন। যার ফলে ব্যবহারকারী তার ওয়েবসাইট বা ব্লগ, সহজে Optimize এবং Rank করতে পারে।


কোনো হোস্টিং-কে যখন কোনো কোম্পানি বিভিন্ন টুলস এর সাহায্যে নিজেই ম্যানেজ করে তখন তাকে ম্যানেজ ওয়েব হোস্টিং বলা হয়। এখানে নির্দিষ্ট কোম্পানি শুধুমাত্র তার ইউজারদের পরিষেবা প্রদানের জন্য এই ধরনের হোস্টিং তৈরি করে থাকে। তবে ক্ষেত্র বিশেষে বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলোও ম্যানেজ হোস্টিং তৈরি করে থাকে।


উদাহরণ হিসেবে:

ধরুন আপনার একটি ৫ তলা বিশিষ্ট নিজস্ব বাড়ি আছে, যার মধ্যে ৪ তলা ভাড়া দিয়েছেন। আপনি আপনার ভাড়াটিয়াদের যেন কোন রকম অসুবিধা না হয় তা নিজেই তদারকি করেন।

Cloud Hosting


বিভিন্ন সার্ভার থেকে যখন নির্দিষ্ট ডোমেইন অ্যাক্সেস করা হয় তখন তাকে ক্লাউড হোস্টিং বলে।


ক্লাউড হোস্টিং এর জন্য ভিন্ন ভিন্ন দেশ বা স্থানে, পৃথক পৃথক সার্ভার রাখা হয়। যদিও পৃথিবীর প্রতিটি দেশে তো আর হোর্স্টিং সার্ভার নেই। এক্ষেত্রে হোস্টিং প্রোভাইডাররা কয়েকটি দেশকে একটি অঞ্চল হিসেবে নিয়ে সার্ভার স্থাপন করে। আর যখন কোনো একটি দেশের নির্দিষ্ট ইউজার, নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটটিকে ব্যবহার করতে চায় তখন ঐ দেশের বা ঐ দেশটি যে অঞ্চলের সেই দেশ বা অঞ্চলের ওয়েবহোস্টিং এর সাথে ডোমেইনটি কানেক্ট করা হয়।


যেমন- আপনার ওয়েবসাইটটিতে আমেরিকা, ভারত ও বাংলাদেশ এ তিনটি দেশ থেকে ট্রাফিক আসে। যদি আমেরিকার কোনো এক ইউজার আপনার ওয়েবসাইটটি খুলতে চায়, তখন আমেরিকায় যে সার্ভারটি রাখা আছে তার সাহায্যে আপনার ওয়েবসাইটটি অ্যাক্সেস করা হবে। তেমনি যখন ভারতের বা বাংলাদেশের কোন ব্যক্তি আপনার ওয়েবসাইটটিতে যায় তখন ভারত বা বাংলাদেশে যে সার্ভার টি আছে অথবা যদি না থাকে সেক্ষেত্রে ভারত বা বাংলাদেশ ক্লাউড হোস্টিং সার্ভার এর যে অঞ্চলে পড়েছে সে অঞ্চলের নির্ধারিত সার্ভারের সাহায্যে আপনার ওয়েবসাইটটি কানেক্ট হয়ে যাবে।


ফলে আপনার ওয়েবসাইটটি ডাউন হওয়া থেকে রক্ষা পাবে এবং বিভিন্ন ধরনের সার্ভারের জন্য আপনার ওয়েবসাইটের সমস্ত ডাটা প্রত্যেক সার্ভারে আলাদাভাবে জমা থাকবে।এতে করে কোন সার্ভার থেকে আপনার ডাটা মুছে গেলেও আপনি অন্য যে কোন একটি সার্ভার থেকে সেই সমস্ত ডাটা পুনরায় ফিরে পেতে পারবেন।


ক্লাউড হোস্টিং এর মূল্য মাসে ৯০০-১৪০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে।


Reseller Hosting


যখন কোন হোস্টিং কোম্পানি থেকে একটি পুরো সিপিইউ বা ডেডিকেটেড হোস্টিং কিনে নিয়ে সেটিকে আলাদাভাবে হোস্টিং পরিষেবার জন্য বিভিন্ন ভাগে ভাগ করে নেয়া হয় তখন তাকে রিসেলার হোস্টিং বলে।


এ রিসেলার হোস্টিংটা অনেকটা শেয়ার্ড হোস্টিং এর মতই। এখানে আপনি কোন নির্দিষ্ট হোস্টিং নিজের নামে কিনে সেটিকে বাকি ইউজারদের মাঝে ভাড়া দিতে পারবেন।


যেহেতু এটি নির্দিষ্ট হোস্টিং থেকে কিনে নেওয়ার পর পুনরায় বিক্রি করা হয় তাই এটিকে রিসেলার হোস্টিং বলা হয়। ধরুন আপনি একটি হোস্টিং কিনলেন তারপর এই হোস্টিং এর মধ্যেই VPS, Shared, Business নামক কয়েকটি বিভাগে ভাগ করে ভিন্ন ভিন্ন মূল্য নির্ধারন করলেন এবং বিজ্ঞাপন বা অন্যান্য যোগাযোগের মাধ্যমে ইউজারদের কাছে হোস্টিং ভাড়া দেয়া সম্পর্কে তথ্য শেয়ার করলেন। তখন যেসব ইউজাররা আপনার এই হোস্টিং কিনতে আসবে তাদের কাছ থেকে আপনি ভাড়া নিয়ে এই হোস্টিংটি ব্যবহার করার অনুমতি দিবেন।


উদাহরণ হিসেবে:

আপনি এক ব্যক্তির কাছ থেকে একটি বাড়ি কিনে নিয়ে সেটাকে নিজের নামে করে অন্যদেরকে ভাড়া দিচ্ছেন।


হোস্টিং এর দাম


সুযোগ সুবিধার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন প্রকার পোস্টিং এর দাম বিভিন্ন ধরনের হয়। যেমন-


Shared hosting – ২৫০ থেকে ৬০০ টাকা (প্রতি মাসে)

VPS hosting – ৪০০০ থেকে ২৬০০০ টাকা (প্রতি মাসে)

Dedicated hosting – ১৩০০০ থেকে ৩৫০০০ টাকা (প্রতি মাসে)

Cloud hosting – ৯০০ থেকে ১৪০০ টাকা (প্রতি মাসে)

Reseller hosting – ৩০০০ থেকে ৮০০০ টাকা (প্রতি মাসে)


হোস্টিং সার্ভার কি



হোস্টিং সার্ভার মূলত ওয়েব ভিত্তিক কম্পিউটার। যখন কোন ওয়েবসাইট হোস্টিং এর সাহায্যে কানেক্ট করা হয় তখন ঐ ওয়েবসাইটের যাবতীয় ডাটা নির্দিষ্ট হোস্টিং কোম্পানির সার্ভারে জমা হয়। এই সার্ভারটিকে হোস্টিং সার্ভার বলা হয়। যার মধ্যে থাকা তথ্যসমূহ ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক এর মাধ্যমে আদান-প্রদান করা যায়। যেমনঃ ছবি, টেক্সট, ভিডিওসহ অন্যান্য ফাইলসমূহ।


নির্দিষ্ট হোস্টিং কোম্পানীর নির্দিষ্ট হোস্টিং সার্ভার থাকে, যেখানে কাস্টমারদের ওয়েবসাইটের ব্যাকআপ, ফাইল, পাসওয়ার্ড এর সমস্ত ডাটা স্টোর হয়ে থাকে।

কেন হোস্টিং সার্ভার প্রয়োজন পড়ে?


ওয়েবসাইটের সকল তথ্য/ফাইলসমূহ সংরক্ষনের জন্য হোস্টিং সার্ভারের প্রয়োজন হয়। 


সহজ ভাষায়, ওয়েব হোস্টিং সার্ভার হল ওয়েবসাইটের প্রধান স্টোরেজ (কম্পিউটারের মেইন স্টোরেজ যেমন হার্ডডিক্স আর ফোন এর স্টোরেজ মেমোরি কার্ড), যেখানে ওয়েবসাইটের সকল তথ্য/ফাইল সংরক্ষন করা থাকে এবং সেই ফাইলগুলো ওয়েবসাইটির মাধ্যমে পরিচালনা করা যায়।


যেমনঃ নতুন ফাইল এড করা, এডিট করা, ফাইল/তথ্য মুছে ফেলা ইত্যাদি।


আমরা যখন ফেইসবুকে বা টুইটারে কোন ছবি/লেখা প্রকাশ করি, তখন তা ফেইসবুক বা টুইটারের হোস্টিং সার্ভারে সংরক্ষণ হয় এবং সেখান থেকেই সেই কন্টেন্টগুলো আমাদের প্রোফাইলসহ অন্যান্যদের প্রোফাইলে প্রদর্শিত হয়।




বিশ্বব্যাপী সেরা কিছু ডোমেইন হোস্টিং প্রোভাইডার


আপনি যদি ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরীর জন্য হোস্টিং কিনতে চান তাহলে এ সকল বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে হোস্টিং ক্রয় করতে পারেন। এই সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলি আমাদের দেশ সহ বিশ্বের প্রায় সকল দেশে সব থেকে ভালো ডোমেইন হোস্টিং প্রোভাইডার কোম্পানি।

Siteground

A2 hosting

Bluehost

Namecheap

Hostgator

Hostinger

Dreamhost

GreenGeeks


শেষ কথা:


কোন হোস্টিংটি কখন ব্যবহার করবেন তা মূলত আপনার ব্যবসা (ই-কমার্স সাইট, সার্ভিস বেইজ সাইট নাকি ব্লগ সাইট) এর উপর নির্ভর করে।


নতুন ব্লগ সাইট অথবা শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক তথ্যগুলো অনলাইন প্রদর্শনের ওয়েবাইট (যেমন স্কুল কলেজ এর ওয়েবসাইট) করতে চাইলে আপনি শেয়ার্ড হোস্টিং ব্যবহার করতে পারেন। 


ই-কমার্স সাইটের জন্য ভিপিএস সার্ভার নিতে পারেন। এতে গ্রাহকরা স্টোর ব্রাউজিং-এ ভাল অভিজ্ঞতা পাবে। অথবা আপনি আপনার ওয়েবসাইটের ট্রাফিক অনুযায়ীও হোস্টিং নির্বাচন করতে পারেন।


উপরের আর্টিকেলটিতে হোস্টিং কি, হোস্টিং কত প্রকারের হয় এবং হোস্টিং এর দাম কেমন হবে এ সম্বন্ধে যাবতীয় ইনফরমেশন দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশাকরি হোস্টিং সম্বন্ধে পরিপূর্ণ ধারনা দিতে না পারলেও মৌলিক ধারনাটা দিতে পেরেছি। উপরোক্ত তথ্যগুলো কাজে লাগাতে পারলে আশাকরি আপনার ওয়েবসাইট তৈরীতে সহজ হবে। আজকের পর্বটি কেমন হয়েছে তা কমেন্ট করে জানানোর জন্য অনুরোধ রইল।


*

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)
নবীনতর পূর্বতন

ads

ads